ওয়েব হোস্টিং সার্ভিস নিয়ে প্রতারিত হচ্ছেন নাতো?
ওয়েব হোস্টিং কেন দরকার?
ওয়েবসাইটে ঢুকলে যা যা প্রদর্শন করবে যেমন অভ্যন্তরীন কোড (যা সরাসরি দেখা যায় না), ছবি, টেক্সট, অডিও, ভিডিও সহ সব ধরণের ফাইল কোনো না কোন কম্পিউটারে (সার্ভারে) রাখতে হয় এবং সেই কম্পিউটারটি সবসময়ই ইন্টারনেট সংযোগ অবস্থায় চালু রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে ইন্টারনেটের স্পিডও যথেষ্ট ফাস্ট হতে হবে যেন একসাথে অনেকগুলো ফাইল দ্রুত আদান-প্রদান করা যায়।
আপনি চাইলে আপনার কম্পিউটারের মাধ্যমেই কাজটি করতে পারবেন তবে সেক্ষেত্রে কিছু বিষয় সেটাপ করে ২৪ ঘন্টাই আপনার কম্পিউটার সচল রাখতে হবে এবং দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করতে হবে। যদি কোনো কারণে কিছুক্ষনের জন্যও ইন্টারনেট চলে যায় অথবা কম্পিউটারটি বন্ধ হয়ে যায় তাহলে মানুষ ততক্ষন আপনার সাইটে প্রবেশ করতে পারবে না। এসব দেখাশোনা ও রক্ষনাবক্ষনের জন্য দক্ষ মানুষও প্রয়োজন হবে।
এই ধরণের সার্ভার কম্পিউটার বানানো এবং রক্ষণাবেক্ষণ যথেষ্ট ব্যয়বহুল হয়ে ওঠে। তাই ৯৯.৯৯% মানুষের ক্ষেত্রেই নিজেদের সার্ভারে ওয়েবসাইট হোস্ট করা সম্ভব হয় না।
কিভাবে অন্যের সার্ভার নেয়া যায়? খরচ কেমন?
বিভিন্ন কোম্পানি বা ডাটাসেন্টার আছে যারা শুধুমাত্র কম্পিউটার বা সার্ভার ভাড়া দিয়ে থাকে। অর্থাৎ তারা তাদের এমন কিছু কম্পিউটার ব্যবহার করার সুযোগ দেয় যেগুলোতে ২৪ ঘন্টাই ইন্টারনেট সংযোগের ব্যবস্থা থাকে এবং ২৪ ঘন্টাই চালু থাকে। এই ধরণের সার্ভারগুলোর কনফিগারেশনের উপর ভিত্তি করে মাসিক খরচ দিতে হয়। যেমন আইটি বন্ধু লিমিটেড কিছু কিছু সার্ভারের ভাড়া মাসে ৩০ হাজার টাকারও বেশী দিয়ে থাকে।
কেউ একা একটি ওয়েবসাইট হোস্ট করার জন্য সার্ভার সহ অন্যান্য সার্ভিসের মোট খরচ মাসে ৩০ হাজার করে হলে বছরে ৩০,০০০*১২=৩,৬০,০০০ টাকা দেয়ার যুক্তিই নেই। কারণ একটি সার্ভারে শুধু ১টি ওয়েবসাইট নয়, কয়েক হাজার ওয়েবসাইটও হোস্ট করা যায়। তাই খরচ ও ঝামেলা কম করার জন্যই অনেকে মিলে একটি সার্ভার ব্যবহার করে যেখানে মাধ্যম হিসেবে ওয়েব হোস্টিং প্রোভাইডার কাজ করে। যেহেতু অনেকে মিলে একটি সার্ভার ব্যবহার করে সেহেতু এটাকে শেয়ার্ড হোস্টিং বলে। এই ধরণের শেয়ার্ড হোস্টিং এ মুলত প্রতিজনকে একেকটি একাউন্ট (cPanel/DirectAdmin/Plesk) দেয়া হয় এবং একাউন্টের জন্য সর্বোচ্চ কতটুকু রিসোর্স ব্যবহার করতে পারবে সেটার লিমিট সেট করে দেয়া হয়। সার্ভিস প্রোভাইডাররা এমন ভাবেই লিমিট সেট করে যেন যে যত বেশী টাকা দিবে সে সর্বোচ্চ তত বেশী রিসোর্স ব্যবহার করতে পারবে
পণ্য? নাকি সেবা?
আশা করি এবার বুঝেছেন, হোস্টিং কোনো পণ্য না, যে একেবারেই দিয়ে দিতে পারবে। ওয়েব হোস্টিং এক ধরণের সেবা। ওয়েব হোস্টিং প্রভাইডার যত মাস ডাটাসেন্টারকে (example: AWS, Google Cloud, Digital Ocean, Contabo etc) টাকা দিবে, ততদিন তারা সার্ভার কম্পিউটার ব্যবহারের সুযোগ পাবে। আবার আপনারা যত মাস পেমেন্ট দিবেন, তত মাস ব্যবহারের সুযোগ পাবেন। যদি হটাত করে আপনার প্রভাইডার ডাতাসেন্টারকে পেমেন্ট দেইয়া বন্ধ করে দেইয়, আপনি সার্ভিস প্রোভাইডারকে যত বছরের টাকাই দিয়ে থাকেন না কেন। আপনার সাইট উধাও হয়ে যাবে।
চলুন আমরা কিছু ধরণের ওয়েব হোস্টিং প্রোভাইডারের কাজ দেখিঃ
- উপরে একটা কথা বলেছিলাম, একাউন্টগুলোতে (cPanel) শুধুমাত্র সর্বোচ্চ ব্যবহারের লিমিটই দেখা যায়, কিন্ত আপনার জন্য কোনো মিনিমাম রিসোর্স বরাদ্ধ দেয়ার সুযোগ নেই। ফলে অসাধু সার্ভিস প্রোভাইডাররা সিপ্যানেল একাউন্টে বুঝিয়ে দিচ্ছে রিসোর্স (Disk Space, RAM, I/O, Core) অনেক আছে। কারণ এখানে রিসোর্স অল্প হাকলেও যত ইচ্ছে তত দেয়া যায়/ প্রদর্শন করা যায়। যেহেতু শুধুমাত্র ওইগুলো দেখেই প্রকৃত বিষয়টা বুঝার কোনো উপায় নাই, সবাই বিশ্বাস করে ব্যবহার করতে থাকে। এমনও দেখা গিয়েছে, অনেক ওয়েব হোস্টিং প্রোভাইডার শুধু একটি সার্ভারেই সাধারণ ধারণক্ষমতা ৩০০ হলেও ১২০০ ক্লায়েন্ট নিয়ে বসে থাকে। ফলে দেখা যায়, ওয়েবসাইটে ঢুকতে সময় অনেক বেশী নেয়, মাঝে মধ্যে ওয়েবসাইটে ব্রাউজ করা যায়না। আর যেসব ওয়েবসাইটে এ ধরণের সমস্যা বেশী থাকে, সেগুলো গুগল র্যাংকও হারানোয় রিস্ক থাকে। একটি ওয়েবসাইট যদি মাঝে মধ্যেই এমন থাকে, একজন ক্লায়েন্ট আসলে কোম্পানি সম্পর্কে কি ধারণা কারতে পারে? আসলে এই ধরণের ওয়েবসাইট/হোস্টিং থাকার চেয়ে না থাকা ভালো।
- অনেক ওয়েব হোস্টিং প্রোভাইডার আছে যারা খরচ কমানো/অতিরিক্ত লাভের জন্য উপরোক্ত কাজ তো করেই, পাশাপাশি বিভিন্ন ক্রাক সফটওয়্যার সার্ভারে ব্যবহার করে। যেগুলোতে ম্যালওয়্যার থাকার ঝুকি থাকে এবং বিভিন্ন কারণে ক্লায়েন্টদের একাউন্ট/সাইট হ্যাক হবার সম্ভাবনা থাকেই। একবার ভেবে দেখেন তো, আপনি কষ্ট করে সাইটে এত কিছু রাখলেন, ডিজাইন করলেন হটাত করে যদি দেখেন সব অন্যদের হাতে চলে গেলো, আপনার সব কিছু কেউ একজন ডিলেট করে ফেলেছে, তখন কি হবে?
- আরেক ধরণের প্রভাইডার আছে যারা কি ক্ষতি করছে আপনি নিজেও বুঝার ক্ষমতা নেই। আপনার অজান্তেই আপনার ওয়েবসাইটের সকল তথ্য হাতিয়ে নিবে। যেমন আপনার ক্লায়েন্ট এর তথ্য চুরি করা, বিভিন্ন ধরণের ডাটা এনালাইস করে মার্কেটিং করবে, আপনার ওয়েবসাইট হুবহু ক্লোন করবে, বা নকল আরেকটি ডিজাইন বানানোর জন্য কোড কপি করে নিবে, ইত্যাদি।
- আরও একটি মারাত্মক গ্রুপ আছে। যারা মুলত অনেকের কাছেই অনেক কিছু বুঝ দিয়ে সার্ভিস দিবে, এবং অনেকগুলো ক্লায়েন্ট কালেক্ট করবে। যেহেতু এই সার্ভিসগুলো নেয়ার ক্ষেত্রে সবাই বাতসরিক খরচ দেয়, সেহেতু সবার কাছ থেকেই ১ বছরের অগ্রীম পেমেন্ট নিয়ে নেয়। তারপর ২/১ মাস সার্ভিস দেয়ার পরই তারা সব কিছু নিয়ে উধাও হয়ে যায়। তখন সাইটের হোস্টিংও খুজে পাওয়া যাবেনা। এরকম কেইসগুলো গত কয়েক বছরে অনেক বেড়েছে এবং ভবিষ্যতেও বাড়বে। এ ধরণের সমস্যা হলে, ক্লায়েন্টের সকল কষ্ট+টাকা বৃথা যায়। কারণ ওয়েবসাইট এর ডিজাইনও হারিয়ে ফেলতে হয়। মানে এরপর ক্লায়েন্টের কাছে আর কিছুই থাকেনা।
লক্ষনীয়ঃ
এবার আপনি নিজেই ভেবে দেখুন, আপনি কম দামে ওয়েব হোস্টিং নিয়ে কি এসব ধরণের ঝামেলায় পড়বেন? নাকি একটু বেশী খরচ দিয়ে হলেও যাচাই বাছাই করে সার্ভিস নিবেন? মাথায় রাখবেন, ফেইসবুকে শুধু পেইজ খুলেই অনেকে নামে বেনামে ব্যবসা করছে। শুধু পেইজ লাইক দিয়েই বা রিভিউ দিয়েই এসব বিচার করবেন না। কারণ টাকা দিয়ে এসব লাইক আর রিভিউ কেনা যায়। এসব সার্ভিস নেয়ার আগে একটু ঘাটাঘাটি করে দেখবেন এটা কোনো প্রকৃত কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান কিনা। আসলেই এদের লিগ্যাল কোনো এন্টিটি আছে কিনা। সব দিক বিচার করে দেখলে যদি অথেন্টিক এবং ট্রাস্টেড মনে হয় তারপর সার্ভিস নিবেন।
আমরা আপনাকে কিভাবে সহযোগীতা করতে পারি?
বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত কোম্পানি আইটি বন্ধু লিমিটেড মানসম্মত সেবার জন্য স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান। অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান এবং তারকারাও আমাদের উপর আস্থা রাখে এবং সার্ভিস ব্যবহার করে। যেকোনো ধরণের ওয়েবসাইট তৈরি, ওয়েব হোস্টিং, ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন সহ অন্যান্য আইটি সেবার জন্য কল করুন আমাদের হটলাইন নাম্বারে: 01938001000